বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৮:১১ পূর্বাহ্ন
Logo

ছেলের শেষ ফোন: বাবা, আমার পা উড়ে গেছে, কলমা পড়িয়ে দাও

রিপোর্টার / ৬২ বার
আপডেট : রবিবার, ৫ জুন, ২০২২

তিন মাস আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে চাকরিতে ঢোকেন মমিনুল হক (২৭)। শনিবার আগু’ন লাগার পরপরই রাত দশটার দিকে বাবাকে ফোন দেন তিনি। ফোন দিয়ে বলেন, ‘বাবা এখানে কিছুক্ষণ পরে পরে ব্লাস্ট হচ্ছে। সম্ভবত আমি মা’রা যাচ্ছি।’ এরপরই ফোন কে’টে যায়। অনেক চে’ষ্টা করেও মমিনুলকে ফোনে আর পাচ্ছিলেন না বাবা ফরিদুল। এর ১০ মিনিট পরই আবার ফোন, তখনই শুনতে পেলেন ভ’য়াবহ কিছু।

শনিবার মাঝরাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) আহাজারি করতে করতে ছেলের সঙ্গে শেষ কথোপকথনের বি’ষয়ে ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয়বার ফোনে মমিনুল বলেন, ‘বাবা আমা’র একটা পা উড়ে গেছে। আমাকে কলমা পড়িয়ে মাফ করে দেন।’ তখনও ওপাশ থেকে ছেলের আর্তচিৎকার শুনতে পারছিলেন বাবা। পঞ্চাশোর্ধ ফরিদুল বলেন, হাতে ফোন রেখেই মমিনুল বলছিলেন, আমি মাটিতে পড়ে গেছি আমাকে কেউ একটু তুলে দাও’। এসময় কে’টে যায় ফোনের লাইন। ওটাই ছিল ছেলের সঙ্গে শেষ কথা। কথাগু’লো বলেই কান্নায় ভেড়ে পড়েন ফরিদুল।

বিএম কন্টেইনার ডিপোতে মাত্র তিন মাস আগে কাউন্টারে কম্পিউটার অ’পারেটর হিসেবে চাকরি শুরু করেছিলেন মুমিনুল। শনিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরী থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ২৪ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে আগু’নের পর ভ’য়াবহ বি’স্ফো’রণে বহু মানুষের মৃ’ত্যু হয়েছে ও শতাধিক ব্যক্তি আ’হত হয়েছেন। তাদেরই একজন মমিনুল।

তার খালাতো ভাই তায়েব চমেক হাসপাতালে বলেন, তিন মাস আগে মহসিন কলেজ থেকে ইকোনমিক্সে অনার্স শেষ করে চাকরি শুরু করে মমিনুল। শনিবার রাত ৮টার দিকে ডিপোতে যান তিনি। ফরিদুল জানান, মমিনুলের সঙ্গে কথা শেষে তিনি চট্টগ্রাম শহরে থাকা নিজের স্বজনদের ফোন করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে যেতে বলেন। পরে তার চাচা খোরশেদ আলম হাসপাতালে এসে ভাতিজার লা’শ দেখতে পান। পরিবারে দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মুমিনুল মেজ।


আপনার মতামত লিখুন :

এখানে লিখুন:

এ জাতীয় আরো সংবাদ